বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইতিহাস শতাধিক বছরের। ১৮৮০ সালের ফেমিন কমিশন রিপোর্টের ভিত্তিতে একটি ছোট্ট শাখা হিসেবে ‘বেঙ্গল ল্যান্ড রেকর্ডস ডিপার্টমেন্টের’ এর অধীনে এর যাত্রা শুরু হয়। বস্তুতপক্ষে উপমহাদেশের এই অঞ্চলে (বর্তমান বাংলাদেশ) সরকারি পর্যায়ে কৃষি কর্মকান্ডের সূত্রপাত এখান থেকেই। এভাবে কৃষি বিভাগের সূচনা হলেও এতে গবেষণার সুযোগ তেমন ছিল না বলা যায়। গবেষনার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন কৃষি বিভাগকে ল্যান্ড রের্কড ডিপার্টমেন্টের আওতামুক্ত করে একে আলাদা মর্যাদায় অভিষিক্ত করেন এবং গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির জন্য ‘নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচারেল রিসার্চ ল্যাবরেটরি’ নামে ঢাকার তেজগাঁওয়ে একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকেই প্রকৃত পক্ষে তৎকালীন বাংলায় কৃষিতে গবেষণা কার্যক্রমের সূচনা। এরপর ১৯০৮ সালে ১৬১.২০ হেক্টর জমির উপর ঢাকা ফার্ম প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা ফার্মের প্রতিষ্ঠা ছিল কৃষি ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য। কিন্তু ১৯৬২ সালে তৎকালীন সরকার কর্তৃক ২য় রাজধানী প্রতিষ্ঠার জন্য ঢাকা ফার্মের (বর্তমান শেরে বাংলা নগর) জমি অধিগ্রহ করা হলে কৃষি গবেষণার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যাহোক ১৯৬৬ সালে ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে জয়দেবপুরে ২৬০ হেক্টর জমিতে ঢাকা ফার্ম স্থানান্তরিত হয়।
কৃষি গবেষণার ইতিহাসে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে ১৯৭৩ সালের রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে নং-৩২ জারিকরণ। এই অধ্যাদেশ বলে কৃষি গবেষণার উন্নয়ন ও সমন্বিত কার্যক্রমের পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ নং-৬২ এর মাধ্যমে ‘ডাইরেক্টরেট অব এগ্রিকালচার (রিসার্চ এন্ড এডুকেশন)’ বিলুপ্ত হয় এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) স্বায়ত্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।